তিন মাসিক মাশওয়ারা সেপ্টেম্বর, ২০১৭

আলমী ফিকিরঃ

১. আখেরী নবীর উম্মত হিসাবে সারা দুনিয়ায় পুরা উম্মতের মধ্যে পুরা দ্বীন কেয়ামত পর্যন্ত জিন্দা করার জিম্মাদারী আমাদের উপর । এ জন্য প্রত্যেক সাল লাগানো ওলামা হযরত, ৩ চিল্লা দেয়া সাথীকে বিদেশ সফরের জন্য তৈরি করা।

৩ চিল্লার পর পরই সব সাথী পাসপোর্ট বানানো । আল্লার উপর ভরসা করে বিদেশী জামাত তৈরির ফরমে নাম লিখে তারিখ ঠিক করা। মজবুতির সাথে ৫ কাজ করতে থাকা । আলমী ফিকিরের জন্য প্রত্যেক হালকায় ফিকিরওয়ালী জামাত বানানো, যারা বিদেশের জন্য গুনগত এবং লম্বা খরচের জামাত বানানো কোশেশ করবেন । জামাত রওয়ানা হওয়ার আগ পর্যন্ত সাথীদেরকে নিয়ে বার বার বসা। আমরা মাখলুক, আমাদের চেষ্টাও মাখলুক।

নিজের নিয়্যতকে সহিহ্ করে মেহনত করতে থাকা- তবে আমরাও সওয়াব পাব। তাই জেলার জিম্মাদার সাথীগণ শবে জুম্মা, হালকা ও মহল্লার মাশওয়ারায় সবাই মিলে ফিকির করা। নিজেকে কবুল করাই, দু'আ করি ও আলাহপাকের কাছে আশাও রাখি । তবে আল্লাহপাক বিদেশের জন্য পূরুষ ও মাস্তুরাতসহ জামাত বানিয়ে দেবেন ।

আন্দরূনী মূলক (বাংলাদেশের ভিতরে):

১. পাঁচ দিনের জোড়ের কামিয়াবির জন্য করণীয়ঃ

• তিন চিল্লাওয়ালাদের এখন থেকে বছরে তিন চিল্লা ও চিল্লার জন্য তৈরি করে কাকরাইলে পাঠাতে থাকা ।

• সাল, তিন চিল্লা, এক চিল্লাওয়ালা উলামা হজরতগণ এবং সাল ও তিন চিল্লার সাথীগণের মসজিদ ওয়ার লিষ্ট বানিয়ে, গাসত করে আল্লাহর রাস্তায় বের করা, মোকামি কাজে জোড়া ও কমপক্ষে পাঁচ দিনের জন্য টঙ্গীর ময়দানে নিয়ে আসা ।

• জেলা, থানা, শহর ও ইউনিয়নের হালকা ও মাসজিদের মাশওয়ারায় ও শবগুজারিতে জোড়ের আহমিয়াতকে বোঝানো।

• জোড়ের কামিয়াবির জন্য নিজ জেলায় চিল্লার পায়দল জামাত চালানো। এছাড়া ৭-১০ দিনের জন্য জিম্মাদার সাথীদের দিয়ে জামাত বানিয়ে থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মেহনত করা।

• যেহেতু পাঁচ দিনের জোড়ের ৫০ দিন পরে টঙ্গীর ইজতিমা, তাই মাসজিদওয়ার তিন চিল্লা/এক চিল্লার জামাত তৈরি করে আনা- যাতে প্রতি ইউনিয়নে গড়ে ২-৩টি জামাত পাঠানো যায়। মজবুত মাসজিদ থেকে তিন চিল্লার ১ টি ও এক চিলার ২টি জামাত আনার কোশেশ করা। অন্যান্য মাসজিদ থেকেও বেশি থেকে বেশি জামাত নিয়ে আসা। কোশেশ করে চিল্লার জামাতগুলোকে ৫০ দিনের জন্য তৈরি করে আনা যাতে ইজতিমা পর্যন্ত মেহনত করে যেতে পারে ।

• ইস্তিমায়ি তালিমের মওকায় বয়ান করে ও ঘরের তালিমে মা-বোনদের ৫ দিনের জোড়ের তাকাজা বুঝিয়ে ফিকিরমান্দ করা। তারাও যেনো আজায়েম করে প্রত্যেক ঘর থেকে পুরুষদেরকে আল্লাহর রাস্তায় বের করার জন্য কোশেশ করে৷

• মাজুর পুরাতন সাথীদের সাথে দেখা করে তাদেরকেও ফিকিরমান্দ এবং দোওয়ায় লাগানো ।

• যাঁরা জোড়ের থেকে সময় লাগাবেন, তাঁদের সরাসরি তাশকিলের কামরায় পৌঁছে দেয়া : এসব জামাতে যেসব তিন চিল্লার সাথীগণ জুড়বেন, তাঁরা জোড় শেষে জামাতে গিয়ে জুড়বেন।

• দরমিয়ানি মেহনতের জন্য জোড়ের ইস্তিজামি জামাতগুলো (যেমন: খিত্তা, তাশকিল ইত্যাদি) বানিয়ে ইহতিমামের সাথে নিয়ে আসা- যাতে তাঁরা প্রথমদিন ফজর বাদ মোজাকারায় শরিক হতে পারেন ।

• বড়দের কারগুজারি শোনানোর জন্য কাকরাইলের দেয়া ছকে দুইটি বাংলা ও ২০টি উর্দু কপি করে ৫ দিনের জোড়ে সাথে নিয়ে আসবেন ।

• মেহেরবাণী করে কারগুজারির বাংলা একটি ছক জোড়ের কমপক্ষে ১০ দিন আগে কাকরাইলে পাঠালে ভাল হয় ।

• পূর্ববর্তী বছরের ন্যায় ৫ দিনের জোড়ে ও টঙ্গী ইজতেমায় নিজামুদ্দিনের সকল মুরুব্বিগণ, হযরত মাওঃ সা'দ সাহেব (দাঃ বাঃ) ও মাওঃ ইব্রাহিম সাহেব (দাঃ বাঃ) যাতে আসতে পারে তার জন্য দোয়ার এহতেমাম করা।

• ইনশা-আল্লাহ আগামী পাঁচ দিনের জোড় ১৭-২১ নভেম্বর, ২০১৭ টঙ্গী ময়দানে হবে। প্রথম দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে প্রথম নিশিস্ত শুরু হবে।

২. নিজ জেলায় পায়দল জামাত চালানোঃ

বেশি থেকে বেশি পায়দল জামাত নিজ জেলায় চালানোর জন্য কোশেশ করা। এতে পাঁচ দিনের জোড়, জেলার ইজতিমা, টঙ্গীর ইজতিমাসহ বিভিন্ন তাকাজা পূরণ হবে। এই জামাতগুলোর তাফাক্কুদ আমানতদারীর সাথে হওয়া। পায়দল জামাত তৈরী করা এবং রোখের তাজবিজ জেলার মাশওয়ারায় তায় করা, নিজ থানার মধ্যে রোখ না করা, বাজার এবং গায়ের উঠান এলাকায় রোখ করার কোশেশ করা। এইসব জামাতে পুরানো সাথী বেশি হওয়া। কাকরাইলের মাশোওয়ারায় জেলার তজবিজকৃত রোখ এর পরিবর্তন এর এখতিয়ার রয়েছে ।

৩. মাসজিদওয়ার মোকামি কাজঃ

সকল সাথীগণ মজবুতির সাথে মোকামি কাজ করা। সমস্ত মুসল্লিকে মোকামি কাজের সাথে জোড়ানোর কোশেশ করা। মোকামি কাজের মধ্যে নিজের জাতের তরক্কি আছে- এইজন্য ঘরের তালিম, তিন দিনের জামাতে বের হওয়া ইত্যাদি প্রত্যেকটি আমাল আগ্রহ এবং গুরুত্বের সাথে করতে থাকা ।

৪. এক/দুই মাসের তরতিবে কাকরাইলে সাথী পাঠানোঃ

জেলার জিম্মাদার ও বিভিন্ন কাজের যোগ্যতাসম্পন্ন মোনাসেব সাথীগণকে কাকরাইলে এক/দুই মাসের তরতিবে আসার ইহতিমাম করা- যাতে কাকরাইলের বিভিন্ন নজমে কাজ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে খুরুজেও যেতে পারে। বিদেশী মেহমানদের সাথে জোড়ানোর জন্য মোনাসের সাথী তৈরি করে চিল্লার জন্য পাঠানোর চেষ্টা করা। এইসব সাথী ২০-২৫ দিনের জন্যও হতে পারে। সাথীদেরকে মার্কাজের চিঠি দিয়ে পাঠালে ভালো হয়।

৫. বন্যাদুর্গত এলাকা, রোহিঙ্গা ও গায়েরের মেহনতের এলাকায় জামাত পাঠানোঃ

এসব জায়গায় মেহনত করতে পারে-এমন মোনাসেব জামাত জেলা, হালকা থেকে তৈরি করে কাকরাইলের সাথে যোগাযোগ সাপেক্ষে ঐসব এলাকায় পাঠানো। মেহনত করে তাদেরকে দ্বীনের উপরে উঠানো এবং তাদের জরুরতের বিষয়ে সাধ্যমতো সহযোগিতা করা।

৬. মাস্তুরাতের ৬-মাসিক মোজাকারাঃ

পুরানো মাস্তুরাতের ৬-মাসিক মোজাকারা প্রত্যেক জেলায় করার ইহতিমাম করা। জেলায় মোজাকারার মোনাসেব সাথী কম থাকলে বেশি দিন সময় নিয়ে মোজাকারার ব্যবস্থা করা। এছাড়া জেলার সাথীরা কাকরাইলে এসেও মোজাকারা শুনে যেতে পারেন। মোজকারা করনেওয়ালা প্রয়োজনে তারগীব এবং তরতীবের বিষয়গুলো কাগজে পয়েন্ট আকারে লিখে নিতে পারেন যাতে সব বিষয়গুলি মোজাকারায় এসে যায় ।

তাকাজ সমূহঃ

১. নিজামুদ্দিনে খুরুজে এবং তরতীবের জন্য সাথী পাঠানোর কোশেশ করা !

২. এবার যাঁরা হজ্জ করে ফিরেছেন এবং যাঁরা আগামী বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁদেরকে আল্লাহর রাস্তায় বের করার ও মোকামি কাজে জোড়ানোর কোশেশ করা। পুরানো সাথীরা যাঁরা আগামী বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁদেরকে এজেন্সি অনুযায়ী জামাত বানিয়ে হজ্জ মেহনতের জন্য তৈরি করা ।

৩. যেসব দেশী-বিদেশী জামাত আপনাদের জেলায় যাবেন, তাঁদের মোনাসেব নুসরতের ইন্তেজাম করা ।

৪. যেসব জেলায় নিজেদের ইজতিমা হবে, বড়োদের মোজাকারা অনুযায়ী ও আপনাদের দেয়া আজায়েম পুরা করার জন্য জানতোড় মেহনত করা ।

৫. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তালিম চালুসহ ছাত্রদের কাজে লাগানোর জন্য মেহনত করা। এছাড়া যেসব ছাত্রগণ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন, তাদেরকেও তাশকিল করে জামাতে বের করার কোশেশ করা।

৬. কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসাগুলোতে সারা বছর জিয়ারত এবং মেহনত চালু রাখা; বিশেষ করে মাদ্রাসার ছাত্রদের ২৪ ঘন্টার জামাতের হার লাইনে মোজাকারাসহ মোনাসেব নুসরত করা।

৭. বিভিন্ন কারাগারগুলোতে মোনাসের তরিকায় মেহনত করা। যেসব সাথীগণ বিদেশ সফরের জন্য জামাতবন্দী হবেন, ওনারা মেহেরবাণী করে আগের দিন আছরের সময় কাকরাইলে বিদেশী তাশকিলের জামাতের সাথে দেখা করা-যাতে করে তাফাক্কুদ করে পরের দিনের মাশওয়ারায় পেশ করা যায় ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url