মহিলাদের বয়ান | মাওঃ সাইদ আহমদ খান (রহঃ)
প্রখ্যাত মুবাল্লিগ হযরত মাওলানা সাঈদ আহমদ খান সাহেব মহিলাদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান কিছু বয়ান পেশ করেছেন। সংক্ষিপ্ত আকারে তা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। হযরত মাওঃ সাঈদ আহমদ খান সাহেব ১৯৪৭ সাল হতে ১৯৯০ ঈসায়ী সাল পর্যন্ত তেতাল্লিশ বছর মক্কা ও মদীনা শরীফের তাবলিগ জামাতের আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। আমৃত্যু তিনি দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের ময়দানে খেদমত করে গেছেন। উনার বৃদ্ধ বয়সেও তাবলীগ জামাতের গুরুত্ত্বপূর্ন মেহনতে বিভিন্ন দেশ সফর করতেন। তিনি তাবলীগ জামাতের শীর্ষ স্থানীয় মুরুব্বীদের অন্যতম।
ইসলামে যেসমস্ত নারীরা প্রথমঃ
- সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্ম কবুল করেছেন হযরত খাদিজা রাযিঃ।
- সর্বপ্রথম শহীদ হয়েছেন হযরত সুমাইয়া রাযিঃ।
- দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বপ্রথম ব্যয় করেছেন হযরত খাদিজা রাযিঃ।
- সবচেয়ে বড় মুহাদ্দিছা হযরত আয়শা ছিদ্দিকা রাযিঃ।
- দ্বীনের জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্ট করেছেন ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া রাযিঃ।
![]() |
মহিলাদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান নসীহত |
মহিলাদের আমলী বয়ানঃ কিতাবের বাণিসমূহ
- একজন নেককার নারী সত্তর জন আল্লাহর ওলীর চাইতেও উত্তম।
- একজন বদকার নারী হাজার বদকার পুরুষের চাইতেও নিকৃষ্ট।
- যে মহিলা গরু, ছাগল, মহিষের দুধ দোহানো বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে ঐ জানোয়ার তার জন্য দোয়া করে।
- যে মহিলা বিসমিল্লাহ বলিয়া খাবার খাবার প্রস্তুত করেন আল্লাহতায়ালা ঐ রুজীতে বরকত দান করেন।
- যে মহিলা জিকিরের সাথে ঘড় ঝাড়ু দেয় আল্লাহপাক তাকে ক্বাবা ঘর ঝাড়ু দেয়ার সওয়াব দান করেন।
স্বামীর খেদমতের ফজিলত
- যখন স্বামী পেরেশান হইয়া ঘরে ফিরে তখন যদি সে তার স্বামীকে মারহাবা দেয়, ঐ স্ত্রীকে জিহাদের অর্ধেক নেকী দান করা হয়।
- যে মহিলা নামজ, রোজার পাবন্দী করে পবিত্রতা রক্ষা করে চলে, স্বামীর তাবেদারী করে তাকে জান্নাতে যেকোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়া হবে।
- দুই ব্যক্তির নামজ মাথার উপর উঠে না, (১) যে গোলাম তাহার মনিব থেকে পলায়ন করে (২) ঐ নারী যে তার স্বামীর সাথে নাফরমানী করে।
- যখন স্বামী বিদেশ থেকে ফিরে আসে তখন যে স্ত্রী খুশী হইয়া খানা খাওয়ায় এবং সফরকালীন সময়ে স্ত্রী স্বামির হকের কোন খেয়ানত করে না সে বারো বৎসর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।
- যে মহিলা তার স্বামীর খেদমত করে আল্লাহতায়ালা তাকে সাত তোলা স্বর্ণ ছদকা করার সওয়াব দান করবেন।
- যে স্ত্রী তার স্বামীর সন্তুষ্টি নিয়ে মারা যায় তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব।
- যে স্বামী তার স্ত্রীকে একটি মাছয়ালা শিখাবে সে ব্যাক্তি সত্তর বৎসর নফল ইবাদতের সওয়াব পাবে।
- যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে রহমতের নজরে দেখেন এবং স্ত্রীও আপন স্বামীকে রহমতের নজরে দেখেন আল্লাহতায়ালা ঐ দম্পতিকে রহমতের নজরে দেখেন।
- যে মহিলা স্বামীকে আল্লাহর রাস্তায় পাঠাইয়া দেয় এবং নিজেও স্বামীর অনুপস্থিতির কারনে কষ্ট আদরের সাথে বরদাশত করে ঐ মহিলা পুরুষ অপেক্ষা পাচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে, সত্তর হাজার ফেরেশতা তাহাকে এস্তেকবাল করবেন, হুরদের সর্দার হবেন, জাফরান দ্বারা তাকে গোসল দেওয়া হবে। ইয়াকুত নির্মিত ঘোড়ার উপর তাকে সওয়ার করানো হবে এবং তথায় সে স্বামীর অপেক্ষায় থাকবে।
গর্ভবতী মহিলাদের আমল
- একজন গর্ভবতী মহিলার দুই রাকাত নামাজ একজন গর্ভহীন মহিলার আশি রাকাত নামাজের চেয়ে উত্তম।
- যে নারী গর্ভবতী অবস্থায় থাকেন তিনি বাচ্চা প্রসব না হওয়া পর্যন্ত দিনে রোজা এবং রাতে নামাজরত থাকার নেকী পেতে থাকেন।
- যে মহিলার সন্তান প্রসব হয়, তার জন্য তাকে সত্তর বৎসর নফল নামজ ও রোজার নেকী দেওয়া হয়। প্রসবের সময় যে কষ্ট হয় প্রতিবার ব্যথার কারনে হজ্জ্বের সওয়াব দান করা হয়।
- সন্তান প্রসবের চল্লিশ দিনের মধ্যে মারা গেলে তাকে শাহাদাতের সওয়াব ও মর্তবা দান করা হয়।
সন্তান পালনের ফজিলত
- যে মহিলা আপন সন্তানদের জন্য রাত্রি জাগরণ করে তাকে বিশটি গোলাম আজাদ করার নেকী দেওয়া হয়।
- সন্তান কান্নার কারনে যে মা বদদোয়া দেয় না বরং ছবর করে, ঐ মাকে এক বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব দান করা হয়।
- যখন বাচ্চার দুধ পান করানো হয়ে যায় তখন আসমান থেকে একজন ফেরেশতা সুসংবাদ দেয় যে, তোমার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দেয়া হয়েছে।
- যে মহিলা আল্লাহর ওয়াস্তে আপন সন্তানকে দুধ পান করায় তার প্রত্যেক ফোটা দুধের বিনিময়ে এক একটি নেকী তার আমল নামায় লেখা হয়।
- যে মহিলা তার অসুখের কারনে কষ্ট ভোগ করে এবং তারপরেও সন্তানের সেবা করে আল্লাহতায়ালা ঐ মহিলার পিছনের সব গুনাহ মাফ করে দেন এবং বারো বছরের নেকী দান করেন।
মহিলাদের পর্দার বয়ান
- সকল জান্নাতিগন আল্লাহপাকের সাক্ষাতের জন্য যাবে কিন্তু যে মহিলা তার হায়া ও পর্দা রক্ষা করে চলেছে স্বয়ং আল্লাহপাক তাদের সাক্ষাতে যাবে।
- যে মহিলা পর্দা রক্ষা করে না, অন্য পুরুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে ঐ সব মেয়েলোক জান্নাতে যাবে না, এমনকি জান্নতের খুশবুও পাবে না।
- যে মহিলা বেগানা (পর) পুরুষকে উকি মারিয়া দেখে আল্লাহতায়ালা ঐ মহিলাকে লানত করেন।
বিঃ দ্রঃ এখানে বর্নিত ফাজায়েলগুলো আমরা তাহকিক করেছি। অধিকাংশের কোন সহীহ সনদ খুজে পাওয়া যায়নি। তাই এগুলো বয়ানে বর্ননা করা থেকে বিরত থাকাই তাকওয়ার দাবি।