আট প্রকার পাপ এবং তাদের ভয়াবহ পরিণতি: কুরআন ও হাদীসের আলোকে
![]() |
আট প্রকার পাপ এবং তাদের ভয়াবহ পরিণতি |
১. শরাবখোর (মদখোর)
কুরআনের দলিল:
“হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারণকারী তীর এগুলো শয়তানের অপবিত্র কাজ। সুতরাং এগুলো থেকে বেঁচে থাক। যাতে তোমরা সফলকাম হও।”—(সূরা মায়িদা: ৯০)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"মদ সকল অপবিত্রতার জননী। যে মদ পান করল, তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল হবে না।"—(তিরমিজি: ১৮৬২)
২. হামেশা জেনাকারী
কুরআনের দলিল:
"তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটি অশ্লীল কাজ এবং নিকৃষ্ট পথ।"—(সূরা ইসরা: ৩২)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"যখন একজন ব্যভিচার করে, তখন তার ঈমান চলে যায়।"
—(বুখারি: ২৪৭৫)
—(সূরা হুমাজাহ: ১)
—(মুসলিম: ১০৫)
—(নাসায়ি: ২৫৬১)
—(সূরা হুদ: ১১৩)
—(তিরমিজি: ১৯২৭)
—(সূরা নূর: ৩)
—(মুয়াত্তা মালিক: ১৪২৩)
—(সূরা রা’দ: ২১)
—(বুখারি: ৫৯৮৪)
—(সূরা ইসরা: ৩৪)
—(বুখারি: ৩৩৩২)
পাপের মধ্যে ডুবে থাকা মানুষের জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ আমাদের সতর্ক করেছেন। তবে আল্লাহর রহমত অপরিসীম। সুতরাং পাপ হলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করা, ভবিষ্যতে পাপ থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে পাপ থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুন এবং জান্নাতের পথ সুগম করে দিন। আমিন।
—(বুখারি: ২৪৭৫)
৩. চোগলখোর (পরনিন্দাকারী)
কুরআনের দলিল:
"যে ব্যক্তি পেছনে পরনিন্দা করে এবং অন্যের দোষ খোঁজে, তার ধ্বংস অনিবার্য।"—(সূরা হুমাজাহ: ১)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"পরনিন্দাকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"—(মুসলিম: ১০৫)
৪. দাইয়্যুস (যে নিজের পরিবারের পাপাচার প্রতিহত করে না)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"তিন ধরনের মানুষ কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না—যৌবনদোষী, দাইয়্যুস এবং মদ্যপায়ী।"—(নাসায়ি: ২৫৬১)
৫. পরপীড়ক কঠোর স্বভাবের জালিম (অত্যাচারী)
কুরআনের দলিল:
"আর জালিমদের প্রতি ঝুঁকো না, তাহলে আগুন তোমাদের স্পর্শ করবে।"—(সূরা হুদ: ১১৩)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"জালিমদের সাহায্য করো না, অন্যথায় তোমাদের অন্তর কালো হয়ে যাবে।"—(তিরমিজি: ১৯২৭)
৬. ব্যাভিচারকারী পুরুষ-মহিলা
কুরআনের দলিল:
"ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী বা মুশরিক নারীর সাথে বিয়ে করে।"—(সূরা নূর: ৩)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"যে ব্যক্তি ব্যভিচার করে, আল্লাহ তার ওপর ক্রুদ্ধ হন।"—(মুয়াত্তা মালিক: ১৪২৩)
৭. আত্মীয়তা ছেদনকারী নির্মম ব্যক্তি
কুরআনের দলিল:
"যারা আল্লাহর নির্দেশমতো সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তা ছিন্ন করে না, তাদের জন্য জান্নাত।"—(সূরা রা’দ: ২১)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"—(বুখারি: ৫৯৮৪)
৮. অঙ্গীকার ভঙ্গকারী ব্যক্তি
কুরআনের দলিল:
"তোমরা অঙ্গীকার পূরণ করো। নিশ্চয় অঙ্গীকারের ব্যাপারে জবাবদিহি করা হবে।"—(সূরা ইসরা: ৩৪)
হাদীসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,
"মুনাফিকের তিনটি লক্ষণ—অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করা, কথা দিলে ভঙ্গ করা এবং আমানত খেয়ানত করা।"—(বুখারি: ৩৩৩২)
পাপের মধ্যে ডুবে থাকা মানুষের জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ আমাদের সতর্ক করেছেন। তবে আল্লাহর রহমত অপরিসীম। সুতরাং পাপ হলে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করা, ভবিষ্যতে পাপ থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে পাপ থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুন এবং জান্নাতের পথ সুগম করে দিন। আমিন।