ত্রৈমাসিক মাশোয়ারার ফায়সালা সমূহ মার্চ ২০১৮
আলমী ফিকিরঃ
পুরা আলমের তাকাজা পুরা করার জন্য জেলার সমস্ত ৩ চিল্লা ওয়ালা সাথীদেরকে বিদেশ সফরের জন্য তৈরী করা। তাদের এলেমে থাকা দরকার সারা দুনিয়াতে কত দেশ আছে, কোন কোন দেশ থেকে আমাদের মসজিদে জামাত এসেছে বা আসেনি, কোন কোন দেশে জামাত পাঠানোর তাকাজা আছে - এর এক দরদ আর উম্মতের ফিকিরের সাথে যখন আমরা চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ সারা দুনিয়াতে জামাত পাঠানো সহজ হবে।যে সমস্ত জামাত বিদেশের জন্য বিভিন্ন মওকায় ছোয়াদ হয়েছে প্রতি ১/২ সপ্তাহ পর পর তাদেরকে ডেকে অথবা তাদের খেদমতে হাজিরি দিয়ে বিভিন্ন হালাতকে হাল করে জামাতগুলো রওনা করার কোশেষ করানো। জেলার প্রতিটি মসজিদের মসজিদওয়ার জামাত এই ফিকির ও তাকাজা নিয়ে মেহনত করতে থাকা।
পুরুষের পাঁচ মাসের বাহির মুলকের জামাতের সাথে সাথে মাস্তুরাত সহ দুই মাসের জামাতও বানানো এবং তৈয়ার করে পাঠানোর এহতেমাম করলে ভালো হয়।
আন্দুরুনি মুলক (দেশের ভিতরে)-
১) মাদ্রাসার মেহনত :-
বছরের শুরু থেকে দাওরা ও অন্যান্য তুলাবাদের উপর সংশ্লিষ্ট জেলা, থানা ও হালকার সাথীগণ মেহনত করা যাতে বছরের শেষে দাওরার তোলাবারা সালের জন্য এবং অন্যান্য ত্বোলাবারা চিল্লা বা কম-বেশী সময়ের জন্য আল্লাহর রাস্তায় বের করা। আসাতেজায়েকেরাম হাযরাতগণের কম-বেশী ওয়াক্ত লাগানোর তরতিব করলে ভালো হয়। এছাড়াও মাদ্রাসাগুলোতে সারাবছর মেহনত চালু রাখা এবং ছাত্র-শিক্ষকদের মিলে ২৪ ঘন্টার বেশী থেকে বেশী জামাত বের করার কোশেষ করা।বিশেষ করে খেয়ারের সময় ওলামাকেরাম এবং পুরাতন সাথীদের দিয়ে ৭/১০ দিনের জামাত বানিয়ে নিজ জেলার মাদ্রাসাগুলোতে মেহনত করলে ভালো হয়, প্রয়োজনে কাকরাইলের অনুমতি সাপেক্ষে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতেও মাদ্রাসা মেহনতের জন্য ৭/১০ দিনের জামাতের রোখ হতে পারে।
২) পাঁচ কাজ ও হালকার মাসিক জোড় মজবুত করাঃ-
প্রতিটি সাথী নিজের তরক্বীকে সামনে রেখে মজবুতির সাথে পাঁচ কাজ করতে থাকা, জেলার যে সমস্ত মসজিদে আংশিক কাজ আছে, সেখানে পুরা পাঁচ কাজ চালু করার জন্য চেষ্টা করা। হালকার মাসিক জোড়কে মজবুত করার জন্য ৩ দিনের জামাতের জরিয়াও বিভিন্ন মসজিদওয়ার জামাত, ইমাম ও মুয়াজ্জিন সাহেব সহ নতুন-পুরাতন সাথীদের জোড়ে শরিক করানো, বিস্তারিত কারগুজারী শুনে, সবল মসজিদকে দূর্বল মসজিদের জিম্মাদারী দেয়া, তাছাড়া দ্বিতীয় গাস্তের দ্বারাও দূর্বল মসজিদে পাঁচ কাজ মজবুত করার চেষ্টা করা। চলতি জামাতগুলো প্রতিটি মসজিদের সাথীদের নিয়ে হাতে কলমে কাজ করেও পাঁচ কাজ মজবুত করার চেষ্টা করা।৩) বছরে ৪ মাসের জন্য এক মজমা তৈয়ার করাঃ
বিভিন্ন মওকায় মার্কাজে, মহল্লায়, মাসিক জোড়ে ও এনফেরাদী ভাবে তারগীব দিয়ে প্রতি বছর ৪ মাস লাগানোর জন্য এক মজমা তৈয়ারি করার চেষ্টা করা। যারা তৈরী হন তাদের তরতীব ঠিক করা কখন ৪ মাস দিবেন, কিভাবে দিবেন, একত্রে না ভেঙ্গে-ভেঙ্গে ইত্যাদি। জিম্মাদার সাথীরা সবাই বছরে ৪ মাসের জন্য তৈরী হলে ছাত্র/তোলাবাদের জামাত, বিদেশী জামাত সহ সকল তাকাজা পুরা করা সহজ হবে ইন শা ল্লাহ ।৪) নিজ জেলার পায়দল জামাতঃ-
আল্লাহর রাস্তায় প্রতি কদমে সাতশত নেকী, সাতশত গুনাহ মাফ ও সাতশত দারাজাত বোলান্দ হয়। তাই সারাবছর মেহনত করে মোনাসেব সাথীদের দ্বারা নিজ জেলায় পায়দল জামাত চালানোর কোশিষ করা।৫) জেলার ইজতেমার তাহসীনঃ
জেলার ইজতেমা সমূহ ইন্তেজামের লাইনে যত সাদাসিদা হবে ততই উত্তম, খুরুজ বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করা। যারা এবছর ইজতেমা চান তারা নিজ জেলায় ফিরে গিয়ে সাথীদের সাথে পরামর্শ করে খুরুজ ও মোকামি কাজের আজাইম সহ সম্ভাব্য তারিখ কাকরাইলে পাঠালে ভাল হয়।৬) নিজ জেলা থেকে রমজানের খুরুজঃ
যে সমস্ত জেলা সামলাইতে পারে তাদের রমযানের মওকায় ১-চিল্লার জামাতের খুরুজ জেলা মার্কাজ থেকে হবে ইন শা আল্লাহ, রোখ কাকরাইল থেকে দিবে। এ ব্যাপারে পরামর্শ করে কাকরাইল থেকে লিখিত ভাবে এজাজত নেয়া। যারা হেদায়েত ও ওয়াপেছি মোজাকারা শুনতে চান তারা কাকরাইলের সাথে যোগাযোগ করে ৫/৬ জনের এক জামাত পাঠালে ভালো হয়। মাদ্রাসার তোলাবাদের জামাত মখলুত হলে ভালো হয়।৭) হজ্ব মেহনতের জামাতঃ
যারা হজ্বে যাচ্ছেন তাদেরকে তালাশ করে জামাতে জোড়ানোর চেষ্টা করা। প্রত্যেক জেলার সাথীরা মসজিদওয়ার মেহনতের মাধ্যমে হাজী সাহেবানদের নিকট গাস্ত করে, কোন নির্দিষ্ট দিনে মার্কাজে জুড়ে পুরাতন হাজী সহ হজ্জ্ব মেহনতের জামাত বানানো। এছাড়া ট্রাভেল এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করেও হাজী সাহেবানদের জামাত বানানোর কোশিস করা। জামাত বানানোর পর কাকরাইলে ছোয়াদের জন্য পাঠানো যাতে জামাতের নম্বর, মক্কা-মদীনার রোখ ও মোজাকারা করা যায়। মাস্তুরাত সহ হজ্জ্ব মেহনতের জামাত বানানোর চেষ্টা করা।৮) রমজানের মেহনতঃ
রমজানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়াতে নেয়ামত মনে করে ছাত্র-শিক্ষকদের আল্লাহর রাস্তায় বের করার চেষ্টা করা। এই মোবারক মাসে চিল্লা/ ৩ চিল্লার জন্য কসরতের সাথে আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়ার এহতেমাম করা। যে সকল জিম্মার সাথী এ মওকায় মোকামে থাকবেন তারা ইতেকাফের এহতেমাম করে, মসজিদের পাঁচ কাজে মহল্লার সকল মুসলমান ভাইদের কাজে জুড়ানোর চেষ্টা করা ৷(৯) ১ মাসের তরতীবে কাকরাইলে সাথী পাঠানোঃ
জেলার জিম্মাদার ও বিভিন্ন কাজের যোগ্যতাসম্পন্ন সাথীরা কাকরাইলে ১ মাসের তরতীবে আসার এহতেমাম করা, যাতে কাকরাইলের বিভিন্ন নজমকে মজবুত করতে পারেন এবং কাকরাইলের বিভিন্ন আমল থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারেন। এজন্য থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সফর করে সাথীদেরকেও আনার ফিকির করলে ভালো হয়।১০) মাস্তুরাতের মেহনতঃ
প্রত্যেক সাথী নিজের তরবীয়তের জন্য প্রতি মাসে পুরুষদের জামাতে জিম্মাদারীর সাথে যেভাবে ৩ দিন লাগান, ঠিক তেমনই ভাবে প্রত্যেক তৃতীয় মাসে মাস্তুরাত সহ ৩ দিন লাগানোর এহতেমাম করা। এছাড়া সাপ্তাহিক তালিমের মওকায় তশকীল হওয়া নামগুলো, পর্চা অনুযায়ী মসজিদের মাশোয়ারার মাধ্যমে মোলাকাতের জরিয়ায় নগদ জামাত বের করার কোশিষ করা। যারা চিল্লা বা ১০/১৫ দিনের জন্য কাকরাইলে সময় লাগাতে আসবেন তারা প্রথমে কাওয়াইফের পর্চা কাকরাইলে পাঠাবে। ছোয়াদের পরে মাস্তুরাতসহ কাকরাইলে আসবে।(১১) বিবিধঃ
(ক) আগামী সপ্তাহে ঢাকা শহরের ২৪ ঘন্টার মাশোওয়ারা শবগুজারী পয়েন্ট অনুসারে হবে। প্রতিটি হালকা থেকে কত সাথী আসবেন ও কোথায় মাশোওয়ারা হবে তা নিজ নিজ শবগুজারী পয়েন্টের জিম্মাদার সাথীরা তায় করবেন। ঢাকার থানার সাথীরাও মাশোওয়ারাতে শরিক হবেন।(খ) ঢাকার হালকার সাথে যে সমস্ত জেলা জোড়া আছে, তার কোন পরিবর্তন চান বা প্রয়োজন মনে না করেন। তাহা নিজ জেলাতে পরামর্শ করে লিখিত ভাবে কাকরাইলে জানানো।
(গ) আগামী ত্রৈমাসিক মাশোওয়ারা ২২ ও ২৩ শে জুন - ২০১৮ ইং, ৭ ও ৮ই শাওয়াল, রোজ শুক্র ও শনিবার হবে। প্রথম নিশিস্ত সকাল ৯:৩০ টায় শুরু হবে ইনশাআল্লাহ ।
তাকাজা সমূহঃ
১) যে সমস্ত ছাত্ররা এস, এস, সি পরীক্ষার পর সময় লাগিয়ে ফিরে আসছেন তাহাদের মহল্লার কাজে জুড়ে রাখার চেষ্টা করা।২) এইচ, এস, সি/আলিম পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। তাহাদের অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করে বেশি থেকে বেশি ছাত্রদের আল্লাহর রাস্তায় বের করার চেষ্টা করা।
৩) জেলায় অবস্থানরত সাল অথবা কম-বেশী ওয়াক্ত লাগানো ওলামা হাযরাতগণকে কাজের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করা।
৪) মসজিদওয়ার তিন চিল্লার জামাত বের করার এহতেমাম করা ।
৫) জেলার প্রত্যেক কাম করণেওয়ালা সাথীদের খুরুজ ও পাঁচ কাজের ব্যাপারে জিন্দেগীর তরতিব ঠিক করা।
৬) বছরের শুরু থেকে সকল তবকার মধ্যে যেমন ছাত্র-নওজোয়ান, খাওয়াছ, ব্যবসায়ী, গোরাবা, বস্তি-কুলি ইত্যাদি এবং কারাগার ভাইদের উপর মেহনতের তরতীব করা ।
৭) জেলার বধির ভাইদের উপর মেহনত বাড়ানো, মোতারজিম বাড়ানো, শবগুজারীর মওকায় তরজমার ব্যবস্থা করা।
৮) প্রতিটি মসজিদে মকতব চালু করার চেষ্টা করা ।
মওঃ জোবায়ের
পক্ষে
আহলে শূরা, বাংলাদেশ।