মাস্তুরাতসহ জামাত বানানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলি
৩ দিন, ১০ দিন বা ৪০ দিনের মাস্তুরাত জামাত বানানোর জন্য আলাদা আলাদা বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এটা পুরুষ জামাতের মতো নয় যে, যেকোন হালতে একজন সাথী জামাতে বের হয়ে গেলো। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট শর্ত পুরা হলেই কেবলমাত্র একজন সাথী মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারবে অন্যথায় নয়। নিচে শর্তগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মাস্তুরাতসহ ৩ দিনের জামাতের শর্ত:
২। স্বামী-স্ত্রীর সফর উত্তম। শরীয়ত সম্মত অন্য মাহরামও থাকতে পারে। মাহরাম কিছু ওয়াক্ত লাগানোওয়ালা হওয়া আবশ্যক। জামাতের সাথে মাহরামের পূর্ণ সময় থাকা জরুরী। জামাতে অবিবাহিত পুরুষ ১/২ জনের বেশী না হয়।
৩। সেলোয়ার-কামিজ, ওড়না, হাতে-পায়ে মোজা, বোরকা ও চোখঢাকা নেকাবসহ পূর্ণ ও সাদাসিধা লেবাস হতে হবে।
৪। বাচ্চাদের কখনও সাথে নেওয়া যাবে না।
৫। ৩ দিনের জামাতে অবিবাহিতা মেয়ে মায়ের সাথে যেতে পারবে। পুরা জামাতে অবিবাহিতা মেয়ে ১/২ জনের বেশী না হয় । মায়ের অবর্তমানে যে মহিলার অধীনে অবিবাহিতা মেয়ে থাকে তার সাথেও যেতে পারে, যদি পুরুষটি মাহরাম হন।
৬। জামাতে সাথীর সংখ্যা ৮ জোড়ার বেশী না হয় ।
৭। সব সময় অসুস্থ থাকেন, অধিক বৃদ্ধা ও দুর্বল মাস্তুরাত সফরে না যাওয়া চাই।
৮। প্রত্যেক জামাআ'তে ১/২ জন পুরাতন মাস্তুরাত থাকা চাই ।
৯। একবার ৩ দিন লাগানোর ২ মাস পর আবার ৩ দিনের জন্য যেতে পারবেন। পুরাতন সাথী মাশওয়ারা সাপেক্ষে তাকাজার উপর তার পূর্বেও যেতে পারবেন।
![]() |
মাস্তুরাতসহ জামাআ'ত বানানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলি |
মাস্তুরাতসহ ১০/১৫ দিনের জামাতের শর্ত:
১। জামাতের সাথীর সংখ্যা ৫ জোড়ার কম ও ৮ জোড়ার বেশী না হয়। বিবাহের পর ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছে এমন হওয়া চাই। (তবে ৩ দিনের জামাতের জন্য উক্ত ৬ মাসের শর্ত প্রযোজ্য নয়)।
২। মাস্তুরাত কমপক্ষে ৩ দিন ৩ বার সময় লাগানোওয়ালী হতে হবে। শেষ ৩ দিন লাগানোর পর যে কোন সময় ১০/১৫ দিনের জন্য যেতে পারবেন অর্থাৎ ২ মাস অপেক্ষা করা জরুরী নয়।
৩। অবিবাহিতা মেয়ে ও বাচ্চাকে সাথে নেওয়া যাবে না।
৪। মাহরাম বিবাহিত, কমপক্ষে ১ চিল্লা লাগানোওয়ালা, দাঁড়ি বিশিষ্ট হতে হবে, ভারী বয়স্ক হওয়া বেশী মুনাসেব।
৫। পুরা জামাতে শুধুমাত্র ১ জন মাহরামের সহিত ২ জন মাস্তুরাত থাকতে পারবেন।
৬। মাস্তুরাত হামেলা, সার্বক্ষণিক অসুস্থা ও বয়ষ্কা সাথে না নেওয়া (৪ হইতে ৬ মাসের হামেলা হইলে ১০/১৫ দিনের জন্য যেতে পারবে)।
৭। পুরুষের সালানা চিল্লা আলাদা এবং মাস্তুরাত সহ ১০/১৫ দিন আলাদা । এই সময়টা পুরুষের সালানা চিল্লার মধ্যে গন্য হবেনা।
৮। ১ বার ১০/১৫ দিন লাগানোর কমপক্ষে ১ বছর পর ২য় বার ১০/১৫ দিন লাগানো যেতে পারে, তবে ১০/১৫ দিন লাগানোর পর ঐ বছরই যে কোন সময় চিল্লা লাগানো যাবে ।
৯। ৩ দিনের জামাতে বের হবার জন্য যে সকল পাবন্দী ও শর্ত রয়েছে তা ১০/১৫ দিনের জামাতের জন্যও প্রযোজ্য হবে।
মাস্তুরাতসহ ৪০ দিনের জামাতের শর্ত:
১। মাহরাম ৩ চিল্লা লাগানোওয়ালা হতে হবে। মাস্তুরাত কমপক্ষে ১ বার ১০/১৫ দিন লাগানোওয়ালী হতে হবে। ১০/১৫ দিন লাগানোর পর বাড়ীতে গিয়ে পুনরায় চিল্লার জন্য ছোয়াদ হয়ে চিল্লা লাগাতে পারবেন। এক বছর অপেক্ষা করার প্রয়োজন নাই।
২। মাস্তুরাতসহ চিল্লার জামাতে বের হলে পুরুষদের জন্য তা সালানা চিল্লা হিসাবে গণ্য হবে । তার পর কমপক্ষে ২ বছর পুরুষের জামাতে চিল্লা লাগানো জরুরী।
৩। ৩ দিন ও ১০/১৫ দিনের জামাতের জন্য যে সকল পাবন্দী ও শর্ত রয়েছে তা চিল্লার জামাতের জন্যও প্রযোজ্য হবে । তবে হামেলা অবস্থায় মাস্তুরাত চিল্লা লাগাতে পারবেন না ।
বিদেশ যানেওয়ালা মাস্তুরাত জামাতের শর্ত:
১। মাস্তুরাতসহ চিল্লা লাগানোর পর প্রথম বারে ১ বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং পরবর্তিতে প্রতিবারে ২ বছর অতিবাহিত হয়েছে এমন হওয়া ।
২। মাস্তুরাত চিল্লা লাগানোর পর প্রতি বছর ৩ দিন ৩/৪ বার লাগিয়েছেন এমন হওয়া ।
৪। জামাতে ৪ থেকে ৬ জোড়া হয়।
৫। নববিবাহিতা মাস্তুরাত ও হামেলা অবস্থায় মাস্তুরাতকে বিদেশ যানেওয়ালা জামাতে তাশকিল না করা ।
৬। হিন্দুস্তান বা পাকিস্তানে চিল্লার জন্য যেতে হলে মাস্তুরাত কমপক্ষে ৩ দিন ৫ বার লাগানোওয়ালী হওয়া, মাহরাম কমপক্ষে ১ চিল্লা লাগানোওয়ালা হওয়া।