কাকরাইলের চিঠি মার্চ ২০২২
বিসমিহি তা'য়ালা
মোহতারামীন ও মোকাররামীন আহলে শুরা হাযরাত ও জিম্মাদার সাথীগণ, সকল জেলা-
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু,
উম্মিদ হয় যে খোদায়ে পাকের ফজল ও করমে খায়ের ও আফিয়াতের সঙ্গে থেকে দ্বীনের মোবারক মেহেনতে মশগুল আছেন।
পবিত্র রমজান মাস আগত প্রায়, এই মাসের গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্য রজব মাস থেকেই আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দোয়া করতেন “ হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করেন এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াতকে বাড়িয়ে দেন।” হযরত সালমান (রাঃ) বলেন নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসের শেষ তারিখে আমাদের নসীহত করেছিলেন যে, তোমাদের উপর এমন একটি মাস আসছে যা অত্যন্ত মর্যাদাশীল ও বরকতময়। এই মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভের জন্য এই মাসে কোন নফল এবাদত করল, সে যেন রমজানের বাহিরে একটি ফরজ আদায় করল। আর যে ব্যক্তি এই মাসে কোন ফরজ আদায় করল, সে যেন রমজানের বাহিরে সত্তরটি ফরজ আদায় করল। এক হাদীসে আছে, মানুষ যদি জানত যে রমজান কি জিনিস, তাহলে আমার উম্মত এই আকাঙ্ক্ষা করত যে সারা বছর যেন রমজান হয়ে যায়। এ কারণেই হাযরাত সাহাবা (রাঃ) আজমাইনদের জিন্দেগীতে রমজানের বড়ই এহতেমাম ছিল। অপর এক হাদীসে এসেছে, সাহাবাকেরাম (রাঃ) সফরে কোন এক জায়গায় অবস্থান করছিলেন তথায় প্রচণ্ড গরম পড়েছিল, অভাব ও দারিদ্রতার কারণে সকলের নিকট রৌদ্রের গরম হতে বাঁচার মত কাপড়ও ছিলনা। অনেকই হাত দ্বারা ছায়া করে রৌদ্র হতে মাথা ঢাকার চেষ্টা করছিলেন, অনেকে রোজার দরুন দাড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না। এইরূপ অবস্থায়ও তারা রোজাদার ছিলেন। আল্লাহ্ পাক আমাদের এই মোবারক মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানোর তৌফিক দান করেন।
হযরতজী মাওলানা ইউসুফ সাহেব (রহঃ) ফরমান, আল্লাহ্ পাক রমজান মাসে রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রিয় সাহাবাকেরাম (রাঃ) গণের বদরের যুদ্ধের মেহনত ও মোজাহাদা ওয়ালা সফরের দ্বারা গায়েবী শক্তি অর্থাৎ ফেরেশতাগণের অবতারণা ঘটিয়েছেন এবং সমস্ত আরব গোত্রগুলোকে ইসলামে দাখিল করার সফর “মক্কা বিজয়” এই মোবারক মাসেই হয়েছিল। তাই এই মোবারক মাসে মেহনত, মোজাহাদা, আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় নকল হরকত ও রাতের দরদভরা দোয়া মানুষের অন্তরকে ব্যাপক ভাবে হকের দিকে ফিরিয়ে আনে।
তাই সারা দেশের নকল হরকতকে ব্যাপক ভাবে বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক কামকরনেওয়ালা সাথী চিল্লা/৩ চিল্লার জন্য নিজে তৈরি হতে হয়ে অপরকে তৈরি করছেন, বিশেষ করে দ্বীনি মাদ্রাসার তোলাবা, আসাতেজাকেরাম ও কলেজ/ইউনিভার্সিটির ছাত্র শিক্ষকদের জামাত বন্দি করে আল্লাহ পাকের রাস্তায় বের করার জন্য জানতোড় মেহনত করছেন। আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের হওয়া মেহমানদের তালিম, তরবিয়ত ও অন্যান্য বিষয়ে সুষ্ঠ আনজাম দেয়ার জন্য অদ্য কাকরাইলের মাশওয়ারাতে নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো তায় হয়েছেঃ
(ক) আগামী ১৭ ই মার্চ, ২২ বৃহস্পতিবার (১৩ ই শাবান) হতে কেবলমাত্র ২০ টি জেলার অর্থাৎ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও বাগেরহাটের খুরুজের মজমা কাকরাইল মসজিদে আসবেন।
(খ) অনুরুপভাবে ১৭ ই মার্চ’ ২২ বৃহস্পতিবার (১৩ ই শাবান) হতে বাকী ৪৩ টি জেলার অর্থাৎ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, রাজশাহী, নাটোর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, যশোর, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, খুলনা, ঝিনাইদহ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণার খুরুজের মজমা টঙ্গীর টিন শেডে আসবেন।
(গ) ঢাকা শহরের কাকরাইল ও কেরাণীগঞ্জের শবগুজারী পয়েন্টের খুরুজের মজমা কাকরাইল মসজিদে এবং বাকী শবগুজারী পয়েন্ট সাভার, টঙ্গী, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ডেমরা, দোহার থানা, ধামরাই থানা ও নবাবগঞ্জ থানার খুরুজের মজমা উপরে উল্লিখিত তারিখে টঙ্গীর টিন শেডে আসবেন।
(ঘ) ২৪ শে মার্চ' ২২ বৃহস্পতিবার (২০ ই শাবান) কাকরাইলে আমাদের বারী শেষ হওয়ার কারণে সারা দেশের সকল জেলার খুরুজের মজমা ২৪ শে মার্চ' ২২ বৃহস্পতিবার (২০ ই শাবান) থেকে টঙ্গীর টিন শেডে আসবেন।
প্রতিটি জেলা থেকে আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের হওয়া সাথীদের উপর উল্লিখিত মাশওয়ারা অনুসারে পাঠানোর এহতেমাম করলে বহুতি ভালো হয়।
সকল সাথীদের প্রতি সালাম ও দোয়ার দরখাস্ত।
আরজ গুজার
হযরত মাওলানা মোহাম্মদ যুবায়ের
আহলে শুরা
তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ,
কাকরাইল, রমনা, ঢাকা।