ত্রি মাসিক মাশওয়ারার ফায়সালা সমূহ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৬-২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১) আলমী ফিকির ও বাহির মূলকের ৫ মাসের জামাত বানানো
আল্লাহ পাকের মেহেরবানী ৫ মহাদেশে বাংলাদেশের জামাতের বহুতি কদর ও তাকাজা রয়েছে। হযরতজী মাওলানা এনামুল হাসান সাহেব (রহ) ফরমান আমরা যত বিদেশে জামাত পাঠাবো বিদেশ থেকে তত জামাত আমাদের দেশে আসবে। আমরা যারা মাশওয়ারায় বসি, তারা অপরকে তরগীব দেই এবং নিজেরাও বুনিয়াদ হয়ে ৫ মাসের জামাত তৈরী করি। যারা এরাদা করেছেন, নাম লিখেয়েছেন বারবার তাদের কাছে যাওয়া। উনাদের মাসায়েলকে হাল করা, প্রয়োজনে সামানা বিক্রয় করা বা কর্জে হাসানার ব্যবস্থা করে আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করার কোশেষ করা।
তাই জিম্মাদার সাথীরা যারা নাম লিখিয়েছে বা সোয়াদ হয়েছে তাদের বুনিয়াদ করে ওলামা হযরত সহ মুনাসেব ভাষা জাননেওয়ালা সাথীদের দ্বারা ৫ মাসের জামাত মোকাম্মাল করে এখন থেকে কাকরাইলে পৌঁছানোর চেষ্টা করা। কমছেকম ৫ দিনের জোড়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করলে বহুতি ভালো হয়। বিভিন্ন মওকায় রমজান, ভাদ্র মাস ইত্যাদিতে উমুমি জামাত বের হওয়ার রেওয়াজ আছে তেমনি ত্রি মাসিক মাশওয়ারার মওকায় বিদেশে জামাত পাঠানোর এক রেওয়াজ পরে যায়।
২) ৫ দিনের পুরানোদের জোড়কে কামিয়াব করার জন্য কি করনীয়
আগামী ২৮ ই নভেম্বর থেকে ২ রা ডিসেম্বর, ২০২৫ পুরানোদের ৫ দিনের জোড়, এই জোড়ের অন্যতম মাকসাদ হচ্ছে দেশের সমস্ত সাল, ৩ চিল্লা ও ১ চিল্লা দেনেওয়ালা ওলামা হাযরাত ও সাল/৩ চিল্লা দেনেওয়ালা সাথিদের মধ্যে
- সিফতের লাইনে আগে বাড়ানো
- কুরবানীর লাইনে আগে বাড়ানো এবং
- সারা দেশে একই নেহেজে দাওয়াতের কাজ হওয়া।
এই মাকসাদকে সামনে নিয়ে পুরানোদের জোড়কে কামিয়াব করার জন্য-
- জেলা, থানা ও ইউনিয়ন/হালকার সকল মসজিদে সাল/৩ চিল্লা/১ চিল্লা ওলামা হাযরাত গণের এবং সাল/ ৩ চিল্লার সাথীদের লিস্ট হালনাগাদ করা ও তাদের কাছে গাস্ত করে আল্লাহ্ পাকের রাস্তায় বের করা ও তাদের মোকামী কাজে জোড়ানোর চেষ্টা করা। বেশির থেকে বেশি গাস্ত করে সকল পুরানো সাথীদের জোড়ে নিয়ে আসার জোরদার কোশেষ করা।
- এই মওকায় জেলার কাম করনেওয়ালা জিম্মাদার সাথীগণ আগামী ২৪ ঘণ্টার জোড় থেকে ৭/১০ দিনের জামাত বানিয়ে থানা/ ইউনিয়ন/ হালকায় এই তাকাজা নিয়ে সফর শুরু করা। একটি ৭/১০ দিনের জামাত আর একটি ৭/১০ দিনের জামাত বের করে এই ভাবে জোড় পর্যন্ত মেহনতের ধারাবাহিকতা চালু রাখা।
- ঢাকার হালকার সাথীরা নিজস্ব হালকায় ও টেক লাগানো জেলার থানা, ইউনিয়নে ৭/১০ দিনের জামাত নিয়ে যেয়ে অনুরূপভাবে মেহনতের এহতেমাম করলে ভালো হয়।
- পুরানো সাথী ও ওলামা হযরতগণ যেনারা মাজুর হয়ে গিয়েছেন, তাদের খেদমতে হাজিরী দিয়ে জোড়ের ব্যাপারে ফিকিরমান্দ করা ও দোয়া চাওয়া, তাদের চোখের পানি জোড়কে কামিয়াব করার জন্য অনেক সহায়ক হবে ইন শা আল্লাহ্।
- এখন থেকে থানা, ইউনিয়ন ও মসজিদের মাশওয়ারাতে ও শবগুজারীর মওকায় পুরানোদের জোড়ের আহমিয়াত বুঝায়ে সকল সাথীদের মেহনতের উপর আনার চেষ্টা করা।
- ঢাকা শহর সহ সকল জেলা থেকে এই মওকায় কসরতের সাথে ৩ দিনের জামাত বের করে জোড়ের তাকাজা সমূহ খুব চালানো। একটি ৩ দিনের জামাত অপর একটি নগদ ৩ দিনের জামাত বের করে সামনে চালানো। এই ভাবে মেহনতের ধারাবহিকতা পুরানোদের জোড় পর্যন্ত জারি রাখা।
- তাছাড়া মাস্তুরাতের ইজতেমায়ী তালিমের মওকায়, বয়ানে ও ঘরের তালিমে মা-বোনদের পুরানোদের জোড়ের আহমিয়াত ও তাকাজা বুঝায়ে ফিকিরমান্দ করা। তারাও যেন এই আলা মাকসাদ কে সামনে নিয়ে প্রত্যেক ঘর থেকে কমপক্ষে একজন পুরুষ আল্লাহর রাস্তায় বের করার কোশেষ করে এবং মা বোনেরা ইনফেরাদী আমল- নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির, রোজা রেখে জোড়ের কামিয়াবীর জন্য দোয়ারও এহতেমাম করেন।
- যেহেতু পুরানোদের জোড়ের এক চিল্লা অথবা কম-বেশি সময়ের পর ইন শা আল্লাহ টঙ্গীর ইজতেমা, তাই মসজিদওয়ার ৩ চিল্লা/১ চিল্লার জামাত তৈরী করে আনা, যাতে সারা দেশে প্রতিটি ইউনিয়নে ইজতেমার মেহনতকে সামনে নিয়ে ১/২টি জামাত পাঠানো যায়। সকল মসজিদ থেকে কমছেকম ২টি ১ চিল্লার জামাত ও ১টি ৩ চিল্লার জামাত আনা, দুর্বল মসজিদ থেকে ১টি ১ চিল্লার জামাত এর চাইতেও দুর্বল কয়েকটি মসজিদ মিলে হলেও কমপক্ষে ১ টি চিল্লার জামাত বানিয়ে জোড়ে আনার চেষ্টা করা।
- যারা জোড় থেকে সময় লাগাবেন এরকম নতুন সাথীদের তাশকিলে পৌঁছিয়ে জামাত বন্দি করে দেয়া। এসব জামাতে যেসব তিন চিল্লার সাথী এবং কম বেশি ওয়াক্ত লাগানো ওলামা হযরতগণ যাবেন তারা জোড় শেষ করে জামাতে যেয়ে জুড়বেন।
- বড় দের কারগুজারী শোনানোর জন্য কাকরাইল থেকে দেয়া ছকে ২০/২৫ টি (উর্দু ও বাংলা) কপি করে পুরনোদের জোড়ে নিয়ে আসবেন এবং ১ কপি জোড়ের ১৫ দিন পূর্বে কাকরাইলে পাঠালে ভালো হয়।
- পুরাতনদের জোড়ে জেলার খিত্তার জিম্মাদার সাথীর নাম ইতিমধ্যে মাশওয়ারাতে তায় হয়েছে, অনুরূপভাবে তাশকিল, খিত্তার ও জুড়নেওয়ালী ইত্যাদি জামাত মোকাম্মাল করে বৃহস্পতিবার (২৭ শে নভেম্বর) এর মধ্যে নিয়ে আসলে ভালো হয় যাতে শুক্রবার (২৮ শে নভেম্বর) বাদ ফজর মোজাকারায় শরিক হতে পারেন।
- আমাদের জেলার যে সমস্ত ওলামা হযরতগণ সালে চলছেন তারা জোড়ের মওকায় নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান করবেন বলে ফায়সালা হয়েছে। এই মওকায় জেলার সালে চলনেওয়ালা ওলামা হাযরতদের সঙ্গে পরিচয় হওয়া, হালত মালুম করা ও একরাম করার বিরাট সুযোগ, তাই খিত্তার জিম্মাদার সাথীদের সঙ্গে থাকার জায়গা রাখা ও বিভিন্ন আমলে জুড়ানোর চেষ্টা করলে বহুতি ভালো হয়।
৩) নিজ জেলায় পায়দল জামাত চালানোর এহতেমাম
নিজ জেলায় পায়দল জামাতের দ্বারা পুরাতন সাথীদের হরকতে আনা এবং জেলার বানজার/ প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করার বড় মওকা, তাছাড়া আল্লাহর রাস্তায় প্রতি কদমে সাতশত নেকি হয়, সাতশত গুনাহ মাফ ও সাতশত দরজা বুলন্দ হয়। তাই শারায়েত সমূহের দিকে দৃষ্টি রেখে মোনাসেব সাথীদের দ্বারা জামাত তৈরী করে জেলার প্রত্যন্ত থানা/ইউনিয়নে চালানোর এহতেমাম করলে বহুতি ভালো হয়।
৪) জেলার সকল কামকরনেওয়ালা সাথিদের জিন্দেগির (খুরুজের) তরতীব করা
দেশের কামকে আগে বাড়ানের জন্য সকল কামকরনেওয়ালা সাথীদের সালানা মাহানা ও রোজানা খুরুজের মধ্যে আনা বহুতি জরুরী। বিগত কয়েক বছর যাবত তিন মূলকের বড়রা এহতেমামের সাথে এই তাকাজা চালিয়ে আসছেন। এখন পর্যন্ত আমরা গড়ে প্রতিটি জেলায় ২৬% থেকে ৩০% কামকরনেওয়ালা সাথীদের খুরুজের তরতিবের উপর আনতে পেরেছি। তাই পরবর্তী ২৪ ঘন্টার জোড়ে এ বিষয়ে জোড় তরগীব দেওয়া ও মসজিদওয়ার জামাতের মাধ্যমে সকল সাথীদের সালানা মাহানা খুরুজের তরতীব করে আজাইমকৃত সাথীদের নির্দিষ্ট সময়ে উসুল করে জামাত বানিয়ে আল্লাহ পাকের রাস্তায় বের করার কোশেষ করা।
৫) মাস্তুরাতের মেহনতকে আগে বাড়ানোর প্রচেষ্টা
- প্রতিটি কামকরনেওয়ালা সাথী দুই মাস মেহনত করে নতুন জোড়া তৈরী করে তৃতীয় মাসে মাস্তুরাতসহ তিন দিন লাগানোর এহতেমাম করা।
- জেলার সাপ্তাহিক মাশওয়ারাতে মাস্তুরাতের উমুর অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া।
- মহল্লার মসজিদের সাথীরা মুস্তাকিল নিজ মসজিদে সাপ্তাহিক তালিমের কাওয়ায়েফ পুরা করে তালিমের পয়েন্ট নেওয়ার চেষ্টা করা।
- মার্কাজের জিম্মাদার সাথীরা ১০/২০ টি তালিমের পয়েন্টের ঘরওয়ালা সহ মসজিদওয়ার জামাতের সাথীদের থেকে কারগুজারি শুনা ও তাহসিন করার চেষ্টা করা।
- জেলার মাস্তুরাতের কামকে আঞ্জাম দেওয়ার জন্য অস্থায়ী জামাত বানানো।
- এখন থেকে মাস্তুরাত সহ ১০ দিন লাগানোর ১ বছর পরে চিল্লা লাগাতে পারবেন।
- নুসরাতের জন্য প্রতি জেলা ও ঢাকা থেকে সাথী পাঠানোর এহতেমাম করা।
- এখন থেকে মাস্তুরাত সহ নুসরতে আসার জন্য কোনো মাস নির্দিষ্ট থাকবেনা, সারা বছর যে কোনো সময় আসতে পারবেন। তবে যে মাসে কাকরাইলে সংশ্লিষ্ট জেলার তরতীব থাকে ঐ মাসে আসতে পারবেনা। নুসরতের কাওয়ায়েফের কাগজ এক/ দেড় মাস আগে পাঠালে ভালো হয়।
৬) জেলার সকল মসজিদে পাঁচ কাজ চালু করার মেহনত
যে এলাকার/ জেলার মসজিদওয়ার ৫ কাজ যত মজবুত হবে ঐ এলাকার দ্বীনের কাম তত মজবুত হবে। তাই সকল জিম্মাদার সাথীরা নিজ নিজ মসজিদে এহতেমামের সাথে পাঁচ কাজের জন্য সময় ফারেগ করেন। তাছাড়া হালকার/ইউনিয়নের লম্বা মাশওয়ারার মাধ্যমে দুর্বল মসজিদকে চিহ্নিত করে সবল মসজিদকে দুর্বল মসজিদের কাম উঠানোর দায়িত্ব দেওয়া। তাছাড়া কখনো কখনো হালকা / ইউনিয়নের মসজিদওয়ার জামাতকে মার্কাজে ডেকে অথবা মার্কাজের জিম্মাদার সাথীরা হালকার জোড়ে যেয়ে পাঁচ কাজের কারগুজারী শোনা। তরগীব ও তরতীব ঢালা যাতে কিনা মসজিদওয়ার জামাতের সকল সাথী রোজানা মাশওয়ারায় বসার এহতেমাম করে। ঘরঘর মেহনতের তরতীব করা যাতে কিনা হার ফারদের সাথে মোলাকাত হয়। এবং রোজানা মসজিদ ও ঘরের তালিমের এহতেমাম হয়। তাছাড়া প্রত্যেক মসজিদে কাম করনেওয়ালা সাথী আপোষে মাশওয়ারা করে দুইজন করে জোড়া বানায়ে ২৭ দিন মেহনত করে নিজের কামাই মনে করে নতুন সাথীদের নিয়ে তিন দিনের সময় লাগানের তরতীব করা।
তাকাজাসমুহ
- বছরের শুরু থেকে মাদ্রাসার মেহনতের এহতেমাম ও ফারেগিন ওলামা হাযরাতদের জন্য বের করার প্রচেষ্টা।
- অধিকাংশ জেলায় ইজতেমা, রমজান ও এসএসসি ছাত্রদের খুরুজের মওকায় যে কমি হয়েছে তা পুরন করার জন্য জানতোড় মেহনত করা।
- ছাত্র-শিক্ষক ও নওজোয়ানদের মধ্যে মেহনতকে বাড়ানো।
- প্রতি বছর ৪ মাস লাগায় এই এক মজমা তৈরী করার প্রচেষ্টা।
- জেলার সবল মসজিদ থেকে ৪ মাসের মুসতাকিল জামাত বের করার চেষ্টা।
- হজ্জ মেহনতের জামাত বানানো। (যারা হজ্জে যাচ্ছেন তাদের দ্বারা)।
- বিদেশী ছাত্রদের উপর মেহনত।
- গোরাবা তবকার উপর মেহনত।
- কাকরাইলে এক মাসের তরতীবে সাথী পাঠানো।
- ৪০ – ৪০ তরতীবে কারকাইলে নজমে সাথী পাঠানো।
- বহুতল ভবনগুলিতে কাজ চালু করা।
- বধির ভাইদের উপর মেহনত।