হালকার মাসিক জোড়ে করণীয় | তাবলীগ জামাতের মাসিক জোড়
দ্বীনের মেহনতকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা বা ইজতেমাইয়্যাত অপরিহার্য। হালকার মাসিক জোড় হলো সেই সম্মিলিত প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা সাথীদেরকে একত্রিত করে, কাজের কারগুজারী শুনে সংশোধনের সুযোগ করে দেয় এবং নতুন উদ্যোমে মেহনতে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করে। একটি ফলপ্রসূ মাসিক জোড়ের জন্য যে সকল আমলের প্রতি যত্নবান হতে হবে, তা নিচে আলোচনা করা হলো:
এহতেমামের সাথে হালকার মাসিক জোড়ে সমস্ত মসজিদের মসজিদওয়ার জামাতসহ হাজির হওয়া। হালকার মসজিদওয়ার জামাতগুলির মাসিক জোড়ে কি কি আমল হবে তার তাফসিল বা সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
ক) হাজিরা নেওয়া এবং জিম্মাদারী বণ্টন
একরাম বজায় রেখে হাজিরা নেওয়া। যে কয়টি মসজিদের সাথীরা উপস্থিত নাই তাদেরকে আগামী মাসের জোড়ে কোন্ কোন্ মসজিদের সাথীগন নিয়ে আসবেন তার জিম্মাদারী দেওয়া। আজকের জোড়ে যা যা আমল হবে তার কারগুজারিও অনুপস্থিত মসজিদগুলির সাথীদের কাছে গিয়ে তারা বিস্তারিত বুঝিয়ে দিবেন যাতে তারা এই সামনের একমাস সেভাবে মেহনত করতে থাকেন।
খ) কারগুজারী শুনা ও সংশোধন
উপস্থিত প্রত্যেক মসজিদওয়ার জামাতের সাথীদের একজনকে মিম্বারে ডেকে কারগুজারী শুনা ও মহব্বতের সাথে সংশোধন করা। যথাসম্ভব সব মসজিদ থেকে শুনার চেষ্টা করা। কারগুজারীর বিষয়ঃ ৫ কাজের কোন অংশ কিভাবে হচ্ছে, ঘরের তা'লিমে কি কি হয়, ২ গাশত কিভাবে হয়, ২.৫ ঘন্টা, শবগুজারীর এহতেমাম, মাশোয়ারা, জামাতের নুসরত, মসজিদ আবাদী, গলি গলি ভাগ করে মেহনত, মাস্তুরাতসহ জামাত বের হয়েছে কিনা, ৩ দিনের জামাতের হেদায়েত ও ওয়াপেছি কত সময় হয় ইত্যাদি। কারগুজারী শুনে যে সব মসজিদ সবল চিহ্নিত হবে তাদেরকে দুর্বল মসজিদের কাজ উঠানোর জিম্মাদারী দেওয়া।
গ) তরগীবের বয়ান ও আযায়েম
তরগীবের বয়ান ৩০/৪০ মিনিট হবে। ৬ নম্বর, সাহাবাদের কোরবানী, দাওয়াত উম্মতের সবার জিম্মাদারী, ৫ কাজ ইত্যাদি বুঝানো, মাস্তুরাতের কাজ, আলমী ফিকির, ছাত্রদের মেহনত, দায়ীর সিফত ইত্যাদিও বয়ানে বলা। এরপর মসজিদওয়ার হালকা বানিয়ে আগামী ১ মাসের আযায়েম বানানো। আযায়েম অর্থ মজবুত নিয়ত। আযায়েম: ৫ কাজের কি কি বাড়াব, কতঘরে তালিম বাড়াবো, পায়দল ৩ দিনের মাস্তুরাতসহ জামাত ও পুরুষদের জামাত কয়টি বের করব, বিদেশের জন্য কতজন, জামাত কতটি বানাবো ইত্যাদি আযায়েম করা।
ঘ) হায়াতুস সাহাবা পড়া ও পরবর্তী পরিকল্পনা
হায়াতুস সাহাবা আরবীতে পড়ে তরজমা করা। নিজ হালকায় সালের আলেম না থাকলে অন্য হালকা থেকেও দরখাস্ত করে আলেম আনা যেতে পারে। এরপর সাথীদের রায় নিয়ে আগামী মাসের জোড়ের স্থান, তারিখ ও সময় ঠিক করে এলান করে দেওয়া। এরপর দোয়া করে যার যার বাড়ি যাবেন। রাত্রি যাপন হবে না, ইস্তোমায়ী কোন খানা-পিনার ব্যবস্থা হবে না। ইউনিয়নের মাশোয়ারা পূর্বের মতো চালু থাকবে।
বিঃ দ্রঃ বড়দের বর্তমান ফায়সালা অনুযায়ী হালকার জোড়ে হায়াতুস সাহাবার কোনো আমল হবে না এবং হাত তুলে ইজতেমায়ি কোনো দুয়া হবে না শুধু মজলিস ভাংগার দুয়া পড়বে।
১১ ই মার্চ/২০১৭ কাকরাইলের বড়দের তাকাজার কাগজ থেকে প্রাপ্ত (হালকার মাসিক জোড়ে করনীয়)।